তিমির বনিক, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্সদের অবহেলায় সুমী বেগম (২৪) নামের এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। মা মারা যাওয়ার কারণে দুগ্ধপোষ্য ১০ মাসের শিশুটির হাহাকারে ভারী হয়ে উঠে হাসপাতাল চত্বর। গত বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) বিকাল ৫টায় এ ঘটনাটি ঘটে।
নিহত সুমী বেগম সে উপজেলার মুন্সিবাজার ইউপি ধর্মপুর গ্রামের মন্নান মিয়ার মেয়ে।
হাসপাতাল নিহতের স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বুধবার দুপুরে মৌলভীবাজারের খলিলপুর ইউপি সরকারবাজার এলাকার এমরান মিয়ার স্ত্রী এক সন্তানের জননী সুমী বেগমের পেটব্যথা দেখা দিলে তাকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান স্বজনরা। বৃহস্পতিবার সকালে মেডিকেল টেস্ট শেষ করে হাসপাতালে সাধারণ মহিলা ওয়ার্ড নিয়ে আসলে তার অবস্থা আশংকাজনক হয়। তা দেখে সুমির মা রাহেনা বেগম ও বাবা মন্নান মিয়া ডিউটিরত ডাক্তার ও সিনিয়র নার্সদের কাছ বারবার উন্নত চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজার নিয়ে যেতে তাগাদা দেন। তাদের কথার কর্ণপাত করেননি ডাক্তার-নার্সরা। দুপুর ১২টায় সুমির অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে সিনিয়র নার্স অনিতা সিনহা ও মিডওয়াইফ রত্না মণ্ডল তাকে একটি ইনজেকশন পুশ করেন। এরপর থেকেই সুমির আর কোন নড়াছড়া দেখতে না পেয়ে বারবার ডিউটি ডাক্তার মুন্না সিনহা ও নার্সরা বিরক্ত হয়ে বলেন রোগী ঘুমিয়ে আছন, ডিস্টার্ব করবেন না। বিকালেও রোগীর নড়াচড়া না পেয়ে নার্সকে জানালে নার্সরা ডাক্তার মুন্না সিনহাকে নিয়ে আসলে তিনি সুমিকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত সুমির মা রাহেনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য হাসপাতালের নার্স এবং ডিউটি ডাক্তারই দায়ী। আমরা তাদের বিচার চাই।
তবে ডিউটি ডাক্তার মুন্ন সিনহা ও মিডওয়াইফ রত্না মণ্ডল জানান, মৃত রোগীর স্বজনরা আমাদের কাছে রোগীকে রেফারের জন্য বলেননি। আমাদের চিকিৎসার মধ্যে কোন ত্রুটি নেই। প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করতে পারেন।
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় যদি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কেউ দায়ী থাকে তবে তদন্তক্রমে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।