মৌলভীবাজারের জুড়ীতে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মাসুক আহমদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি)র কক্ষের ভেতরে বসে স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর ওপর চড়াও হয়েছেন। এ ব্যাপারে খলিলুর রহমান নামের ওই ব্যবসায়ী মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে জুড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এর আগে বিকেলে তিনি নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে একই অভিযোগ তুলে ধরেন সংবাদকর্মীদের।
খলিলুর রহমানের দাবি, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি একটি সালিসে যোগ দিতে থানায় গেলে ফুলতলা ইউপি নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ তাঁকে দেখা মাত্র চড়াও হয়ে হুমকি ধামকি দেন।
আজ বৃহস্পতিবার ফুলতলা ইউপির নির্বাচন। নির্বাচনে মাসুক আহমদ ছাড়াও চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আবদুল আলীম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তফা মিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রের বরাতে জানা গেছে, খলিলুর রহমানের বাড়ি উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের বাছিরপুর এলাকায়। তিনি বাঁশ ও কাঠের ব্যবসা করেন। ব্যবসার সুবাদে তিনি ফুলতলায় যাতায়াত করেন। গতকাল দুপুরে তিনি সালিশে যোগ দিতে থানায় যান। এ সময় চেয়ারম্যান প্রার্থী মাসুক আহমদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুক মিয়া ওসির কক্ষে বসে ছিলেন। তবে ওই সময় ওসি সেখানে ছিলেন না। খলিলুর ওই কক্ষে ঢুকলে মাসুক আহমদ তাঁকে দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তিনি খলিলুরকে বলেন, ‘তুমি ফুলতলায় যাইও না। তুমি তো খলিল, আমি আসুক চেয়ারম্যানকেও (উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মৃত এম এ মুমিত ওরফে আসুক) বেঁধে রেখেছিলাম। বাপের বেটা হইলে যাইও।’ এ কথা বলে তিনি খলিলুরকে ধাক্কা দেন। এ সময় পুলিশের এক সদস্য ছুটে গিয়ে মাসুক আহমদকে থামিয়ে দেন। এবং খলিলুরকে রক্ষা করে নিয়ে আসে।
এর আগে গতকাল বিকেলে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে একই অভিযোগ করেন খলিলুর। হঠাৎ তাঁর ওপর চড়াও হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য কোনো প্রার্থীর পক্ষে হয়তো তিনি কাজ করছেন, এ রকম ধারণা থেকে মাসুক আহমদ এটা করতে পারেন।
অভিযোগের বিষয়ে মাসুক আহমদ মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘খলিল উল্টাপাল্টা কথা বলায় আমার সঙ্গে একটু কথা-কাটাকাটি হয়। এর বেশি কিছু হয়নি।’
জুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবীর বলেন, গতকাল দুপুরে ওসির কক্ষে মাসুক আহমদ ও খলিলুর রহমানের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। হইচই শুনে তিনি ওসির কক্ষে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। পরে খলিলুর রহমান থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এবিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।