মিরাকলের জন্য এত প্রার্থনা, এতদিনের লড়াই যেন এক নিমিষেই থমকে গেল। ২৪ বছর বয়সেই চিরঘুমের দেশে পারি জমাল কলকাতার ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা।
১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাতে হঠাৎ ব্রেন স্ট্রোক করেন তিনি। এরপর প্রায় দুই সপ্তাহ জ্ঞানহীন কেটে যায় হাসপাতালে। সবাই প্রার্থনা করেছিলেন মিরাকলের জন্য, হয়তো আগের মতোই ফিরে আসবেন লড়াকু মেয়েটা। কিন্তু নাহ! এবার আর ঘুম ভাঙল না অভিনেত্রীর। সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন না-ফেরার দেশে।
এর আগে দুইবার মরনব্যাধি ক্যানসারের সঙ্গে লড়ে ফিরে আসেন ঐন্দ্রিলা। আর সেই লড়াইয়ে পরিবার ছাড়াও শুরু থেকেই যিনি সর্বদা তার পাশে ছিলেন, তিনি ঐন্দ্রিলার প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরী।
ঐন্দ্রিলার এমন মৃত্যুতে তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা শোক জানিয়েছেন। এমনকি দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসানও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টর মাধ্যমে শোক জানিয়েছেন।
নিজ ফেসবুক পেজ ও অ্যাকাউন্টে ঐন্দ্রিলার ছবি পোস্ট করে তাকে নিয়ে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন অভিনেত্রী।
‘ঐন্দ্রিলাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। তবে ওই কিছু মানুষ থাকে না, যাদের দেখলেই কেমন যেন জীবন ঝকমকিয়ে ওঠে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ও ঠিক তেমনি জীবন হয়ে আমার কাছে ধরা দিয়েছে বারবার। সবসময় মুখে উজ্জ্বল হাসি, জীবনীশক্তিতে দৃপ্ত চোখ, জীবনের প্রতি মুহূর্ত আদর করে বেঁচে নিচ্ছিল মেয়েটা; সঙ্গে বাঁচার আসল মর্মটুকু শিখিয়ে যাচ্ছিল আমাদের প্রতিনিয়ত।
জয়া আহসানের পোস্টে
তিনি আরও লেখেন, ‘কী হবে জীবন, যদি তা এমন অন্ধকার দিনে ব্যথিয়ে না ওঠে। আজ শেষ যাত্রায় যে অসীম অনুপ্রেরণা রেখে গেল ঐন্দ্রিলা, তাতেই শান্তি আসুক। এমন অনুপ্রেরণা ভেন্টিলেশনের হাজার সুঁচকে বারবার বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জিতে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে। সেই অসীম ক্ষমতায় ঐন্দ্রিলা আজ জয়ী। মৃত্যুশোক ওকে ছুঁয়ে নতুন অর্থ পেল। ভালো থেকো লড়াকু মেয়ে। মনের মাঝে জীবন চেতনা হয়ে অমর থেকো আজীবন।’
প্রসঙ্গত, শনিবার (১৯ নভেম্বর) রাতেই শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয় ঐন্দ্রিলার। সকালেও বেশ কয়েকবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় অভিনেত্রীর। দীর্ঘদিন লড়াই করে অবশেষে জীবনযুদ্ধে হেরে যান তিনি।
গত ১৪ নভেম্বর (সোমবার) থেকে ঐন্দ্রিলার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। বার বার হৃদ্যন্ত্র বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল তার। এই ধাক্কা আর সামলাতে না পেরে হাসপাতালেই প্রয়াত হলেন ঐন্দ্রিলা।