দেড়শ’ সিসির মোটরসাইকেল দেশের বাজারে বিক্রি হবে এক লাখ টাকার নিচে, এমনই আশার বাণী শোনাচ্ছেন শিল্প উদ্যোক্তারা। এক্ষেত্রে সদ্য অনুমোদিত মোটরসাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা-ই ভরসা যোগাচ্ছে তাদের। যদিও, আমদানি কমানোর নির্দেশনা না থাকায় নীতিমালার বাস্তবায়ন নিয়ে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। এ উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরাও, তবে সামঞ্জস্যপূর্ণ দক্ষ জনশক্তিই বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের। শুধুমাত্র রাজধানীতে গত ৫ বছরে মোটরবাইক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। বিআরটিএ’র তথ্য বলছে, চলতি বছর এপ্রিল পর্যন্ত ঢাকায় নিবন্ধন করা মোটরবাইকের সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। লাভজনক হওয়ায় ব্যক্তিগত গাড়ির মাধ্যমে রাইড শেয়ারিং অ্যাপসে সেবা দিচ্ছেন অনেকেই। এতে ক্রমেই বড় হচ্ছে দেশীয় মোটরবাইকের বাজার। এ পরিস্থিতিতে স্বল্পমূল্যে বাইক সরবরাহে এবার মোটরসাইকেল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা করছে সরকার। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৭ সালের মধ্যে দেশেই ১০ লাখ মোটরবাইক উৎপাদনের। সেই সঙ্গে ১৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের। এ লক্ষ্য অর্জন খুব কঠিন হবে না বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে অতিরিক্ত নিবন্ধন খরচ, ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির জটিলতার সঙ্গে আমদানি সহায়ক বাণিজ্য নীতি বিলোপের আহ্বান তাদের। রানার অটোমোবাইলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান বলেন, ‘আমদানিকে উৎসাহিত করার জন্য যে ডিউটি রিবেট দেয়া হয়েছে তাতে সরকার প্রায় আটাশ কোটি টাকার মতো রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে। এখন এই নীতিমালার মধ্যে এই জিনিসটা নাই যে, আমদানিকে কীভাবে নিরুৎসাহিত করা হবে।’ নিটোল-নিলয় মোটরস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, ‘আজকে মোটরসাইকেলের দাম যদি দুই লাখ, দেড় লাখ থাকে, ম্যানুফ্যাকচারিং করার জন্য এই দামটা নেমে আসবে এক লাখের নিচে। মোটরসাইকেলকে উৎসাহিত করার জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স আরো সহজ করে দিতে হবে। এটির রেজিস্ট্রেশন এবং রোড কষ্ট সর্বনিম্ন রাখা উচিৎ। যদিও নীতিমালা বাস্তবায়নে সামঞ্জস্যপূর্ণ দক্ষ জনগোষ্ঠীর অভাব বড় বাধা হতে পারে বলে আশঙ্কা অর্থনীতিবিদদের। অর্থনীতিবিদ তৌফিক ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের সামনের দিনে বড় চ্যালেঞ্জ হল যে শিল্পনীতি আছে, আমার প্রবৃদ্ধির জন্য যে প্রণোদনা কাঠামো তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমার যে দক্ষতা, শিক্ষা সেইগুলোতে বিনিয়োগ করা। চাহিদা অনুযায়ী, আমরা দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি করতে পারছি কিনা।’ দেশে প্রতিবছর ৪ লাখেরও বেশি মোটরবাইকের চাহিদা রয়েছে। প্রথমবারের মতো উৎপাদন ও বিপণন সহায়ক নীতিমালা হওয়ায় এ খাতে নতুন বিনিয়োগের সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়েছে।