বর্তমান বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান ই-কমার্স খাতে প্রতারণা ঠেকাতে ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করতে সরকার একটি নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
গত বুধবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে মূলত এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী “টিপু মুনশী” বলেন,”দেশের ই-কমার্স খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করার জন্য এই রেগুলেটরি কমিশন গঠন করা হবে।”
”ডিজিটাল প্রতারণার যেন বিচার হয়, সেজন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এবং মানি লন্ডারিং অ্যাক্টে কিছু সংশোধন আনতে হবে। সেই ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একমত পোষণ করেন।”
সেইসাথে প্রতিটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন ছাড়া ই-কমার্স ব্যবসা করা যাবে না।
তিনি আরও জানিয়েছেন যে, বৃহস্পতিবার থেকেই এসব বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করা হবে।
ইভ্যালি সম্ভবত গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারবে না: বাণিজ্যমন্ত্রী
সম্প্রতি ইভ্যালিসহ আরও বেশ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে লাখ লাখ গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট সরকার কর্তৃপক্ষ এই বৈঠকের আয়োজন করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে আরও জানিয়েছেন যে, ইভ্যালির সম্পদ খতিয়ে দেখে গ্রাহক বা মার্চেন্টদের মধ্যে তাদের টাকা কীভাবে ফেরত দেয়া যায়, তা নিয়েও এই বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে।
তিনি বলেন যে, ‘ইভ্যালি গ্রাহকের পেমেন্ট ব্যাক করবে, তাদের তো সেই সামর্থ্যই নাই এখন। কারণ তারা (ইভ্যালি) হয় এখান থেকে টাকা সরিয়ে নিয়েছে, না হয় অপ্রয়োজনীয় খাতে খরচ করেছে। যেমন- ইভ্যালি তাদের বিজ্ঞাপনের পেছনে প্রচুর টাকা খরচ করেছে। সেই টাকা ফেরত পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। আর তাছারাও তারা বিভিন্ন জায়গায় স্পন্সরও করেছে। এই খেলা সেই খেলার পেছনেও তারা র্যানডম পয়সা খরচ করে টাকা অপচয় করেছে তারা। আর এখন তো কোন পার্টনারও তারা পাবে না ব্যবসা কন্টিনিউ করার জন্য।”
সেক্ষেত্রে সরকারের দায়বদ্ধতার বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ”সরকার তো গ্রাহকের কোন টাকা নেয়নি। আর সরকার তো সেই লাভের অংশও নেয়নি। তবে এক্ষেত্রে তবু দায় এড়াতে চাচ্ছি না বলেই তো এই বৈঠকের আয়োজন আমরা করেছি এবং দায় নিয়েই আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে কী করা যায় তার একটি ব্যবস্থা নিতে।”
তিনি আরও জানান, ইভ্যালির সঙ্গেও সরকারের আলোচনা হবে। তাদের যদি কোন পরিকল্পনা থাকে, যে কীভাবে তারা গ্রাহক ও মার্চেন্টদের দেনা শোধ করবে, আর সেটা যদি যুক্তিসঙ্গত হয় তাহলে তাদের সেই সুযোগ দেয়া হতে পারে।
”তাদের সাথেও কথা বলে মূলত জানতে চাওয়া হবে যে, তাদের চিন্তা চেতনাটা কী এবং তারা কিভাবে এই সময় পেরিয়ে সম্মুখে অগ্রসর হতে চাচ্ছে।”
”তাদের (ইভ্যালি) সঙ্গে কথা বলব। তাদের কী সম্পদ আছে, সরকার কী করতে পারে, সেটা দেখতে হবে আমাদের, সেই চেষ্টা আমরা করব। না হলে আইনি ব্যবস্থা তো আছেই,” তিনি বলছেন।
তিনি সাধারণ জনগণের উদ্দেশ্যে বলেছেন যে, “পণ্য কেনার আগে গ্রাহকদের সতর্ক হওয়া অতীব দরকার। লোভনীয় অফার দেখলেই সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়া ঠিক নয়।”