আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর সবচেয়ে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি এখন দেশটি। গত আগস্ট মাসে তালেবানরা দেশটির ক্ষমতা দখলের পর থেকেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এ বিষয়ে বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এতদিন যেসব আন্তর্জাতিক সহায়তার মাধ্যমে দেশটির ভঙ্গুর অর্থনীতি টিকে ছিল সেটা বন্ধ হয়ে গেছে এবং তালেবান সরকারের সঙ্গে কীভাবে কাজ করবে সে বিষয়ে বিশ্বজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
জাতিসংঘ আফগান পরিস্থিতি নিয়ে এক কঠোর সতর্ক বার্তায় জানিয়েছে, আফগানিস্তানে দ্রুত সাহায্য না পৌঁছালে লাখ লাখ মানুষ মারা যাবে। এছাড়া কমপক্ষে ১০ লাখের বেশি শিশু মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছে।
দেশটির হেরাত অঞ্চল ঘুরে বিভিন্ন মানবিক বিপর্যয়ের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে বিবিসির একটি ভিডিও প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আর্থিক সংকটে পড়ে একটি পরিবারের পিতা-মাতা তাদের কন্যা শিশুকে ৫০০ ডলারে বিক্রি করে দিয়েছেন। তবে, ওই পরিবারের নিরাপত্তার কারণে তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
বিক্রি হওয়া শিশুটির মা বিবিসিকে জানান, আমার বাকি ছেলে-মেয়েরা না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে। তাই একজনকে বিক্রি করে দিতে হয়েছে।
ওই শিশুর বাবা বলেন, বাড়িতে কোনো খাবার নেই। খাবার কেনার মতো কোনো অর্থও নেই। আমার মেয়ে জানে না তার ভবিষ্যত কী হবে। জানি না সে এটাকে কীভাবে নেবে। কিন্তু আমার এটা করতে হয়েছে।
তবে বিক্রির শর্তে বলা হয়েছে, শিশুটি হাঁটা শিখলে ক্রেতা তাকে নিয়ে যাবেন এবং তার ছেলের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে দেবেন।
ইতোমধ্যে বিক্রির ৫০০ ডলারের অর্ধেক টাকা পেয়েও গেছেন ওই পরিবার। যা দিয়ে কয়েক মাসের খাবার কিনতে পারবেন।
এছাড়া ওই প্রতিবেদনে আরও দেখানো হয়, হেরাত অঞ্চলের কোনো হাসপাতালের ডাক্তার-নার্সরা ৪ মাস ধরে বেতন পান না। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার মতো কেনো অর্থও নেই। ফলে রোগীরা ঠিকমতো সেবা পাচ্ছেন না।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার বড় অংশ বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল, যা এখন বন্ধ।