মাত্র ভোরের আলো ফুটলো। ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীত একটুও দমাতে পারে নি ধর্মপ্রাণ মুসলমানের। হু হু করে কাঁদছে লাখো মানুষ। নিজেদের অতীত জীবনের পাপমোচন, বরকতময় জিন্দেগি ও জালিমের জুলুম থেকে মুসলিম উম্মাহকে হেফাজত করার প্রার্থনা মহান আল্লাহর দরবারে। মুহুর্মুহু আমিন আমিন ধ্বনিতে মুখরিত পুরো এলাকা। ১৩ একর আয়তনের সীরাত ময়দান ছাড়িয়ে লোকে লোকারণ্য আশপাশের গ্রাম-রাস্তা-ঘাট। চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতীতে অনুষ্ঠিত ১৯ দিনব্যাপী সিরাতুন্নবী (সাঃ) মাহফিলের আখেরি মুনাজাতের দৃশ্য এটি। গত শনিবার ফজরের নামাজের পরপরই অনুষ্ঠিত হয় আখেরি মুনাজাত।
মোনাজাত পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লাহ শাহী জামে মসজিদের খতিব, আওলাদে রাসুল (সাঃ) মাওলানা সৈয়দ আনোয়ার হোসাইন তাহের জাবেরি আলমাদানি। রবিবার সকাল ৯ টা থেকে একটানা আখেরি মুনাজাতের আগ পর্যন্ত চলে নির্ধারিত বিষয়ে বিদগ্ধ আলেমগণের আলোচনা।
সমাপনী দিবসের চারটি অধিবেশনে মাওলানা আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে দেশে প্রখ্যাত আলেম,ওলামাসহ লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা উপস্থিত ছিলেন। মুনাজাতে আরাকান, সিরিয়া, কাশ্মিরসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নির্যাতিত মুসলমানদের জন্য দোয়া করার সময় মুসল্লিদের কান্নার আওয়াজে পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে।
এছাড়া বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে নিপিড়িত মজলুম আলেমদের জন্যও দোয়া করা হয়। এর আগে রাত নামার সাথে সাথে ঐতিহাসিক সিরাত ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে। প্যান্ডেল ছাড়িয়ে খোলা আকাশের নিচে জড়ো হতে থাকে মুসল্লিরা। ঘন কুয়াশা ও প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে মানুষের উপস্থিতিতে পুরো গ্রাম ভরে যায়। দেশের বিভিন্ন জেলা ছাড়াও পাশের কয়েক রাষ্ট্র থেকে ধর্মপ্রাণ তৌহিদী জনতা মাহ্ফিলে উপস্থিত হয়।
পুরো ১৯ দিনব্যাপী উপস্থিত মুসল্লীদের জন্য তাবাররুকের ব্যবস্থা থাকে এ মাহফিলে।
আজ ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | সন্ধ্যা ৬:০৫ | শনিবার
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি