আফ্রিকার দেশ মালির প্রধানমন্ত্রী বোবোউ চিসে ও প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বৌবাকার কেইতাকে আটক করেছে দেশটির সেনা বাহিনীর একটি অংশ। মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) দিনভর দেশটির কাতি সামরিক ঘাটিতে গোলাগুলির পর তাদের আটক করা হয় বলে জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা।
প্রতক্ষদর্শীদের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কাতি ঘাঁটির আশপাশে সাজোয়া ট্যাংক নিয়ে সেনাদের টহল দিতে দেখা যায়। এ বিষয়ে দেশটির এক সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র বলছে, গোলাগুলির খবর ছাড়া অন্য কোনো তথ্য এখনো জানতে পারেনি তারা।
অন্যদিকে বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, ‘প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী এখন আমাদের হাতে রয়েছেন। আমরা তাদের বাস ভবনের নিয়ন্ত্রণ নিতে সক্ষম হয়েছি।’
সেখানকার ফরাসি দূতাবাসের সূত্র অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকালে সশস্ত্র বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য বামাকোর উদ্দেশে রওয়ানা হন। পরিস্থিতি ভালোভাবে না বুঝে সেখানকার বাসিন্দাদের ঘর থেকে বের না হতে সতর্ক করা হয়েছে। গেল কয়েক মাস ধরেই মালিতে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন সময় দেশটির জঙ্গিগোষ্ঠী এবং সন্ত্রাসীদের কারণে উত্তপ্ত হয় মালি। বেসামরিক নাগরিকদের উপর হামলায় বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন।
এর আগে গত ১২ জুলাই মালিতে কয়েক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক অস্থিরতা থামাতে সাংবিধানিক আদালত ভেঙে দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বৌবাকার কেইতা। ফ্রিকার এ দেশটির সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীরা পার্লামেন্ট নির্বাচনের কিছু আসনের ফল নিয়ে সাংবিধানিক আদালতের দেয়া বিতর্কিত সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছিল। মালির উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের অনেক এলাকায় জিহাদি গোষ্ঠীগুলো ব্যাপক সক্রিয়। এ অস্থিরতা তাদেরকে আরও সুযোগ করে দিতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দেশটির সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবত দুর্নীতি এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থতার অভিযোগে আন্দোলন করে আসছিলা সাধারণ মানুষ।
মঙ্গলবার সকালে গুলিবর্ষণের পরপরই মালির নরওয়ে দূতাবাস নিজ দেশের নাগরিকদের এক সতর্কবার্তায় বলেছে, ‘সশস্ত্র বাহিনীতে বিদ্রোহের বিষয়ে দূতাবাসকে অবহিত করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনী বামাকোর দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থায় নরওয়েজিয়ানদের উচিত সাবধানতা অবলম্বন করা এবং পরিস্থিতি পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকা।’ বামাকোয় ফরাসি দূতাবাসও এক সতর্কবার্তায় বলেছে, ‘১৮ আগস্ট সকালে গুরুতর অস্থিরতার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে নাগরিকদের বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’