আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করা ১০ বছর বয়সী রংপুরের গঙ্গাচড়ার হাফেজ হুজাইফা বিন মনিরুজ্জামানকে তার গ্রামের বাড়ি উপজেলা সদর ইউনিয়নের গান্নারপার এলাকায় হাজারও মানুষের ঢল। সম্প্রতি তানজানিয়ার দারুস সালামে ‘তানজানিয়া ইন্টারন্যাশনাল হলি কোরআন অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ প্রথম গ্রুপে (১২ বছরের নিচে বাচ্চাদের পূর্ণ ৩০পারা) ৩০ টি দেশের প্রতিযোগীদের পিছনে ফেলে রংপুরের গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের সন্তান হাফেজ হুজাইফা প্রথম স্থান লাভের গৌরব অর্জন করে।
এর আগে গত বুধবার পুরস্কার নিয়ে দেশে ফিরলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন তার প্রতিষ্ঠানের ওস্তাদ, সহপাঠি, তার আত্মীয়-স্বজন এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা। এরপর শুক্রবার দুপুর ১২ টার দিকে ঢাকা থেকে তার জন্মস্থান গঙ্গাচড়ায় প্রবেশ করলে তাকে দেখতে হাজারও মানুষের ঢল নামে। এ সময় তাকে দেখতে আসা লোকজন ফুল ছিটিয়ে এবং ফুলের মালা পরিয়ে বরণ করে তাকবির ধ্বনি দিয়ে র্যালির মাধ্যমে গাড়িতে করে তাকে তার বাড়ি গাল্লারপাড়ে নিয়ে যান। সেখানেও তার এলাকাবাসী তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। এরপর নিজ বাসায় ফিরে সে তার দাদার কবর জিয়ারত করেন।
হাফেজ হুজাইফা গঙ্গাচড়া উপজেলার গান্নারপাড় এলাকার মনিরুজ্জামান ও হালিমা বেগম দম্পতির ১ম সন্তান। সে গঙ্গাচড়ার মাদসারাতুদ দাওয়াহ ওয়াল ইরশাদ (তাকওয়া) মাদসারার ছাত্র ছিলো। বর্তমানে সে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে অবস্থিত তাহফিজুল কোরআন ওয়াস সুন্নাহ মাদ্রাসার ছাত্র। ছেলের এমন অর্জনে বাবা মনিরুজ্জামান বলেন, আমার সন্তান ২৯ টি দেশকে পিছনে ফেলে প্রথম হয়েছে। এজন্য বাবা হিসেবে আমি গর্বিত। আমি সকলের কাছে আমার সন্তানের জন্য দোয়া চাই সে যেন দেশের সুনাম আরো উজ্জ্বল করতে পারে।
হাফেজ হুজাইফার সাথে কথা হলে সে বলে, ‘বাংলাদেশে ৩০ হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে আমাকে নির্বাচিত করে তানজানিয়ায় পাঠানো হয়। আলহামদুলিল্লাহ সেখানে ৩০ টি দেশের প্রতিযোগীরদের মধ্যে আমি প্রথম হই। এজন্য আমি দেশবাসী, আমার বাবা, মা ও আমার ওস্তাদকে ধন্যবাদ জানাই।
তার শিক্ষক হাফেজ কারি নাজমুল হাসান বলেন, প্রতিযোগিতায় ওর তিলাওয়াত শুনে আমি মুগ্ধ হয়েছি। তিলাওয়াত এত শ্রুতিমধুর ছিল যে যেখানে প্রতিযোগিতা হচ্ছিল ওই হলরুমে সবাই তাকবির ধ্বনি দিয়ে মুখরিত করে রেখেছিল। হুজাইফা বিশ্ববরেণ্য আলেম হয়ে ইসলাম এবং দেশের মানুষের খেদমত করুক এবং দেশের নাম আরো উজ্জ্বল করুক এই কামনা।
এ বিষয়ে গঙ্গাচড়া উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা নাহিদ তামান্না বলেন, তার এই সাফল্যে গঙ্গাচড়াবাসিসহ সারাদেশ আজ গর্বিত। খুব শীঘ্রই তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। সে গঙ্গাচড়া উপজেলার গর্ব। তার জন্য অনেক শুভ কামনা।
আজ ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | হেমন্তকাল | ১৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি | রাত ১০:৫২ | বৃহস্পতিবার
ডিবিএন/এসই/ মোস্তাফিজুর রহমান বাপ্পি