কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি : নওগাঁর আত্রাইয়ে মেহেদির রং না মুছতেই শয়ন কক্ষে গলায় ফাঁস দিয়ে এক নবদম্পতি আত্নহত্যা করেছে। তাদের আত্নহত্যার প্রকৃত কারন জানা যায়নি। এ নিয়ে এলাকার জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতের যে কোন সময় উপজেলার সুদরানা গ্রামে।
গতকাল বুধবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ওই গ্রামের ছাইফুল ইসলামের ছেলে মাসুম (২৩) গত দুই মাস আগে বিয়ে করে তার আপন মামাতো বোন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া গ্রামের আশকর আলীর মেয়ে লিমা খাতুনকে (১৮)। আত্নীয়তার সুবাদে পূর্ব থেকে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং সেই প্রেম থেকেই দু’জনের বিয়ে হয়।
ছেলের মা নাদিরা বেগম জানান, মঙ্গলবার রাতে ছেলে মাসুম বাইরে বেড়াতে যায়। এদিকে পুত্রবধূ স্বামীর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। পরে মাসুম বাড়ি আসলে রাতের খাবার না খেয়েই স্বামী স্ত্রী এক ঘরে শুয়ে পড়ে। পরে গৃহকর্ত্রী নাদিরা তাদেরকে খাবারে জন্য ডাকাডাকি করলে মাসুম উঠে খাবার খেলেও পুত্রবধূ লীমা রাতের খাবার খায়নি।
এদিকে গতকাল সকালে তাদেরকে ঘুম থেকে জাগানোর জন্য মা নাদিরা দফায় দফায় ডাকাডাকি করেন । কিন্তু তাদের কোন সাড়া না পেয়ে দরজার ফাঁক দিয়ে পুত্রবধূর লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় তিনি চিৎকার শুরু করলে স্থানীয় লোকজন এসে শয়নঘরের দরজা ভেঙ্গে দেখতে পান দু’জনের ঝুলন্ত লাশ। পরে তারা লাশ দু’টি নামিয়ে নিচে রেখে দেন।
এদিকে নবদম্পতির একসাথে আত্নহত্যার বিষয়টি প্রচার হলে এলাকার হাজার হাজার মানুষ ওই বাড়িতে ভীড় জমায়। সংবাদ পেয়ে নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রকিবুল হাসান ইবনে রহমান ও আত্রাই থানার ওসি তারেকুর রহমান ঘটনাস্থল পদির্শন করেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন খান বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয় বিদারক। মনে হচ্ছে অভিমান করেই দু’জনে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
আত্রাই থানার ওসি তারেকুর রহমান বলেন, লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আত্রাই থানায় একটি ইউডি মামলা রুজু করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।