আজকের দিনটি শুধুই বাবাদের জন্য। সারা বিশ্বের সন্তানেরা পালন করবেন এই দিবসটি।
এনসাইক্লোপেডিয়া মতে, জুন মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্বের প্রায় ৭৪টি দেশে বাবা দিবস পালিত হয়। বাবার প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা, জানানোর জন্যই এই দিবস।
উইকিপিডিয়া থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯০৮ সালে প্রথম বাবা দিবস উদ্যাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ১৯১০ সালে ওয়াশিংটনে মা দিবস নিয়ে একটি বক্তৃতা শোনার পর সোনোরা স্মার্ট ডড বাবা দিবস পালনের প্রস্তাব করেন চার্চের কাছে। গৃহযুদ্ধের সময়কার সৈনিক, তার বাবা একা হাতে তাদের ছয় ভাইবোনকে বড় করেছিলেন। চার্চ তার প্রস্তাবটি গ্রহণ করে। প্রাথমিকভাবে সোনোরা তার বাবার জন্মদিনের দিন ৫জুন বাবা দিবস পালনের প্রস্তুতি নিলেও পাদ্রিদের বক্তৃতা তৈরি না হওয়ায় দিনটে পিছিয়ে যায়। অবশেষে জুন মাসের তৃতীয় রোববার ১৯ জুন তারা বাবা দিবস পালন করে।
১৯১৩ সালে আমেরিকান সংসদে বাবা দিবসে ছুটি ঘোষণার জন্য একটি বিল উত্থাপন করা হয়। ১৯২৪ সালে সে সময়কার আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজ বিলটিতে পূর্ণ সমর্থন দেন। ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন জুন মাসের তৃতীয় রবিবারকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাবা দিবস হিসেবে নির্ধারণ করে ছুটি ঘোষণা করেন। ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন প্রতিবছর জাতীয়ভাবে বাবা দিবস পালনের রীতি চালু করেন।
বর্তমানে বিশ্বের প্রায় ৮৭টি দেশ বাবা দিবস পালন করে। তারমধ্যে জুন মাসের তৃতীয় রবিবারে দিবসটি পালিত হয় ৫২টি দেশে। এরমধ্যে বাংলাদেশ, ভারত, অ্যান্টিগুয়া, বাহামা, বুলগেরিয়া, পাকিস্তান, কানাডা, চিলি, চেক প্রজাতন্ত্র, ফ্রান্স, জাপান, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা, সুইজারল্যান্ড, তুরস্ক, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, ভেনিজুয়েলা ও জিম্বাবুয়ে অন্যতম।
অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ঘরে ঘরে নানা আয়োজনে পালন হবে বাবা দিবস। বাবাকে শুভেচ্ছা জানাতে কার্ড, গিফট হিসেবে ফাদারস ডে মগ, টি-শার্ট ইত্যাদি তৈরি করে গিফট কর্নারগুলো। পাশাপাশি এ দিবসকে ঘিরে নাটক, টকশো ইত্যাদি টিভি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া সংবাদপত্রসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমেও বিশেষ লেখা প্রকাশ বা প্রচার করে পালন করা হবে বাবা দিবস।
আপাত দৃষ্টিতে অনেকের কাছেই মা দিবস বা বাবা দিবস পালনের বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব পায় না। তাই বলে এ ধরনের দিবসগুলো একেবারেই যে অপ্রয়োজনীয়, তেমনটা কিন্তু বলা যাবে না। সন্তানের জন্য বাবার ভালোবাসা অসীম। মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট বাবর সন্তানের প্রতি বাবার ভালোবাসার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে আছেন। তিনি সন্তান হুমায়ুনের জীবনের বিনিময়ে নিজের জীবন ত্যাগ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি। এমন স্বার্থহীন যার ভালোবাসা, বাবা দিবসে সেই বাবাকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ জানানোর সুযোগ আসে সন্তানদের সামনে। তাছাড়া বাবা দিবস পালনের ফলে সমাজে এবং পরিবারে বাবাদের যে অবদান তা যে সমাজ এবং নিজের সন্তানরা মূল্যায়ন করছে, এ বিষয়টিও বাবাদের বেশ আনন্দ দেয়।