বিনোদন ডেস্কঃ আজ ১৮ অক্টোবর সোমবার আইয়ুব বাচ্চু প্রয়াণের ৩ বছর হলো। দেখতে দেখতে কেটে গেল তিন বছর। তাঁর গান ‘আর বেশি কাঁদালে উড়াল দেব আকাশে’- এর মতই সুর মিলিয়ে রুপালি গিটার ফেলে সত্যি সত্যি এই দিনে আকাশে উড়াল দিয়েছেন কিংবদন্তী সংগীতশিল্পী আইয়ুব বাচ্চু। হঠাৎ তার উড়ে যাওয়া কেউ-ই মেনে নিতে পারেননি।
প্রয়াণ দিবসে আইয়ুব বাচ্চুকে স্মরণ করছেন তার সহকর্মী, সংগীতযোদ্ধা, ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। তবে এই দিনে যার মনটা সবচেয়ে বেশি ভারী হয়ে যায়, তিনি আহনাফ তাজোয়ার আইয়ুব। আইয়ুব বাচ্চুর একমাত্র ছেলে।
চট্টগ্রামের এক রক্ষণশীল পরিবার থেকে উঠে এসেছেন আইয়ুব বাচ্চু। সংগীতের প্রতি তার অদম্য আগ্রহ আর ভালোবাসার সাক্ষী গোটা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির মানুষ। শূন্য থেকে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছেছিলেন তিনি। দেশের ব্যান্ড মিউজিকে এনেছিলেন বিপ্লব। একাধারে গায়ক, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক হিসেবে জনপ্রিয় ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। তার হাত ধরে সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলা ব্যান্ডজগৎ। এ দেশের চলচ্চিত্রও পেয়েছে অনেক শ্রোতাপ্রিয় গান।
এক নজরে আইয়ুব বাচ্চুঃ
জন্ম: ১৬ আগস্ট ১৯৬২, চট্টগ্রাম।
সংগীত জীবন শুরু: ১৯৭৭।
প্রথম গান: হারানো বিকেলের গল্প।
ব্যান্ড: প্রথম ব্যান্ড ফিলিংস (১৯৭৮)। এরপর যোগ দেন সোলসে। ১৯৮০ থেকে পরবর্তী এক দশক এই ব্যান্ডে যুক্ত ছিলেন। সোলস ছাড়ার পর ১৯৯১ সালে নিজে গঠন করেন নতুন ব্যান্ড এলআরবি। প্রথমে এলআরবির পূর্ণ অর্থ ছিল লিটল রিভার ব্যান্ড। পরে এই নাম বদলে করা হয় লাভ রানস ব্লাইন্ড।
প্রথম একক অ্যালবাম : রক্তগোলাপ (১৯৮৬)।
এলআরবির প্রথম অ্যালবাম : এলআরবি (১৯৯২)।
সংগীত জীবন : ব্যান্ড অ্যালবাম-এলআরবি (১৯৯২), সুখ (১৯৯৩), তবুও (১৯৯৪), ঘুমন্ত শহরে (১৯৯৫), ফেরারী মন (১৯৯৬), স্বপ্ন (১৯৯৬), আমাদের বিস্ময় (১৯৯৮), মন চাইলে মন পাবে (২০০০), অচেনা জীবন (২০০৩), মনে আছে নাকি নেই, ২০০৫), স্পর্শ (২০০৮), যুদ্ধ (২০১২)।
একক অ্যালবাম : রক্তগোলাপ (১৯৮৬), ময়না (১৯৮৮), কষ্ট (১৯৯৫), সময় (১৯৯৮), একা (১৯৯৯), প্রেম তুমি কি! (২০০২), দুটি মন (২০০২), কাফেলা (২০০২), প্রেম প্রেমের মতো (২০০৩), পথের গান (২০০৪), ভাটির টানে মাটির গানে (২০০৬), জীবন (২০০৬), সাউন্ড অব সাইলেন্স (ইন্স্ট্রুমেন্টাল, ২০০৭), রিমঝিম বৃষ্টি (২০০৮), বলিনি কখনো (২০০৯) ও জীবনের গল্প (২০১৫)।
এ ছাড়া অসংখ্য মিশ্র অ্যালবামে কাজ করেছেন। এর মধ্যে প্রিন্স মাহমুদের সুরে করা মিশ্র অ্যালবামগুলোতে তার গান আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পায়।
চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় গানের তালিকায় রয়েছে- ‘সাগরিকা’ ছবির ‘আকাশ ছুঁয়েছে মাটিকে’, ‘লুটতরাজ’ ছবির ‘অনন্ত প্রেম তুমি দাও আমাকে’, ‘আম্মাজান’ ছবির ‘আম্মাজান’, ‘স্বামী আর স্ত্রী’, ‘ব্যাচেলর’ ছবির ‘আমি তো প্রেমে পড়িনি প্রেম আমার উপরে পড়েছে’, ‘লাল বাদশা’ ছবির ‘আরো আগে কেনো তুমি এলে না’, ‘তেজী’ ছবিতে ‘এই জগৎ সংসারে তুমি এমনই একজন’, ‘তোমার আমার প্রেম এক জনমের নয়’, ‘মেয়েরা মাস্তান’ ছবিতে ‘ঘড়ির কাঁটা থেমে থাক’, ‘চোরাবালি’ ছবিতে ‘ভুলে গেছি জুতোটার ফিতেটাও বাঁধতে’।
এর মধ্যে ‘আম্মাজান’ গানটি বাংলা ছবির ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় গানগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত।