বি এন পি নেতা গায়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা নাকি “বাই চান্স হয়ে গেছে”। স্বাধীনতা যদি বাই চান্স হয় তাহলে মুক্তিযূদ্ধটি কি? ৩০ লক্ষ মানুষের প্রানহানী আর দুই লক্ষ নারীর সম্ভ্রমহানী হলো কেন? রনাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধারা পঙ্গুত্ব বরন করলো কিভাবে? স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে বি এন পি নেতার এমন ধৃষ্ঠতাপূর্ন বক্তব্য জাতির অস্থিত্বকে অস্বিকার করার সামিল। এমন উক্তি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। একই দলের আরেক নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন জাতীয় সংবিধান সঠিক নয়। তিনি সংবিধান রচয়িতাদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। বলেছেন ক্ষমতায় গেলে তারা নতুন করে সংবিধান রচনা করবেন। যারা দেশের স্বাধীনতার অস্থিত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে, যারা দেশের সংবিধানকেই গ্রহন করেনা তাদের এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকবে কিনা জনগন তা বিচার করবে!
আ আ মিন্টু আইনের ছাত্র শিক্ষক বা বিশেষজ্ঞ নন। তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী। সব সরকারর সুবিধা নিয়ে প্রচুর অর্থের মালীক হয়েছেন। একজন ব্যবসায়ীকে দিয়ে সংবিধানের মত বিষয়ে যারা কথা বলিয়েছে তারা কারা? সেই অদৃশ্য শত্রুটি দীর্ঘদিন ধরে দেশে তৎপর। বি এন পি জন্মলগ্ন থেকেই এই অদৃশ্য অপশক্তির নির্দেশে রাজনীতি করে আসছে। অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে একমাত্র দল জামাত তাদের অন্যতম সতীর্থ। দুই নেতা তাদের বক্তব্যে জাতিকে একটি মেসেজ দিয়েছে। মেসেজটি হলো দল হিসাবে বি এন পি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্বীকার করেনা। খুন করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় গিয়ে তাদের সেই লক্ষ্যটিকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে। সংবিধান বদল করেছে, ইতিহাস বিকৃতি করেছে আর স্বাধীনতার শত্রুদেরকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেছে। জাতীয় সঙ্গীতও পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছিল পারেনি। তবে ধর্মনিরপেক্ষ নীতি পরিবর্তন করে ধর্মের নামে উগ্রবাদকে সন্নিবেসীত করে দিয়েছে সংবিধানে।
রাজনীতির এই স্পর্শকাতর বিষয়টি মুসলিম অধ্যুষিত দেশে কতটা জটিল বাংলাদেশ তার প্রমান।ধর্মীয় অনুশাসন না মেনে একটি দল ইসলামী তখমা লাগিয়ে নিয়েছে। আর ধর্মনিরপেক্ষ নীতিটি ধর্মবিরোধীর আখ্যা পেয়েছে। সেই কারনেই নির্বাচনে ধর্মীয় বিশ্বাসে ভোটার দের মধ্যে দন্দ হয় সংঘাতে। অথচ নিরপেক্ষ নীতিটাই ইসলামের অনুশাসন। লক্ষ্য পুরনে জন্মলগ্ন থেকেই দলটি মুক্তিযূদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আর ইতিহাস বিকৃত করেছে। একটি প্রজন্ম সত্যিকার ইতিহাসটাই জানতে পারেনি। বিষয়টি এমনভাবে শেখানো হয়েছে যে সব জেনে এখনো বি এন পি’কেই ইসলামি দল মনে করে। একজন জিয়াকে ঘোষক বানিয়ে বিতর্ক করে চলেছে কে আসলে স্বাধীনতার মহানায়ক! কারন এই অপশক্তি জানে এই দুটি বিষয়কে বিতর্কে জিয়াইয়ে রাখা নাগেলে রাজনীতিতে বি এন পি’র অস্তিত্ব শুন্য। দলটি তিনবার ক্ষমতায় গেছে, দেশের মৌলিক চরত্র হরন করা ছাড়া তাদের কোন অর্জন নেই। এখন যখন আবার নির্বাচন সন্নিকটে, রাজনীতিতে অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখতে সরকারের বিরুদ্ধে সমলোচনা ছাড়া ভিন্ন কোন ইস্যু নেই তাদের।
জনগনের স্বার্থ আদায়ে সঠিক কোন আন্দোলনও বি এন পি দেখাতে পারেনি। ডিসম্বরে চেষ্টা করে নেতৃত্বের ব্যর্থতায় সব বিফলে গেছে। আর মাত্র ১১ মাস বাকী নির্বাচনের। বহু জেলার কোন কমিটিও দিতে পারেনি। যে সময়টুকু হাতে রয়েছে তা দল গোছাতে যথেষ্ঠ নয়। নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষনা দিয়েছে আগেই। এখন নির্বাচনে গেলে ফলফল হবে আগের চেয়েও খাড়াপ। টানা তিন মেয়াদে সরকার সাফল্য দেখিয়েছে এখন বিদেশীরা বলে দেশ এগিয়ে গেছে। এখন জনগনকে বিভ্রান্ত করা ছাড়া আর কোন শক্ত ইস্যু বি এন পি’র হাতে নেই। তাই পরিকল্পিতভাবেই এই দুটি বিষয়কে সামনে আনতে চাইছে বি এন পি। গায়েশ্বর রায় এবং আ আ মিন্টুর মূখ দিয়ে বি এন পি সেই কাজটিই করিয়েছে। কিন্তু একটু ভুল হয়ে গেছে। বাংলাদেশের জনগন উন্নয়ন দেখে নিজেরাও বদলে গেছে। এখন চোখে যা দেখে তা নিয়ে মিথাচার গ্রহন করেনা। বরং যাদের জন্ম তারিখ মনে থাকেনা তাদের কোন কথাই আর বিস্বাস করেনা। দুর্নীতি নিয়ে গরম বক্তব্য দেওয়া দুর্নীতির অভিযোগে দন্ডপ্রাপ্ত কারও মুখে শোভা পায়না।
জয়বাংলা।।