তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া নির্দেশনায় ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিয়াউর রহমান এর নির্দেশনায় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মৌলভীবাজার মোঃ ইয়াছিনুল হক, পুলিশ পরিদর্শক পরিমল চন্দ্র দেব ও পুলিশ পরিদর্শক বদিউজ্জামান এর সার্বিক তত্বাবধানে মৌলভীবাজার মডেল থানার এসআই এনামুল হক এর নেতৃত্বে এএসআই মাহবুবুল আলম সহ একটি টিম এবং এসআই শরীফ এর নেতৃত্বে আরও একটি টিম ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলাধীন বিজয়নগর থানা ও সড়াইল থানা এলাকায় মাছ ব্যবসায়ী ও রিক্সাচালক এর ছদ্মবেশ ধারণ করে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় দীর্ঘ ২৯ ঘন্টার বিরামহীন অভিযান পরিচালনা করিয়া সড়াইল থানাধীন প্রত্যন্ত হাওড় বেষ্টিত সাজদাপুর সাকিন হইতে হিজরা মার্ডার ( ক্লুলেস) মামলার আসামী মোঃ আসুক মিয়াকে (৪৮), পিতা- মৃত রব্বান মিয়া, সাং- মাতাবপুর, থানা ও জেলা- মৌলভীবাজার গ্রেফতার করা হয় গতকাল সোমবার ১৫ ইং ফেব্রুয়ারী।
বিগত ২৮ নবেম্বর ২০২০ইং মৌলভীবাজার শহরের চাঁদনীঘাট ব্রিজের কাছে অঞ্জনা (আলমগীর আহমদ) নামের এক হিজড়া নিহত হয়েছে রাত ১০টা ২০মিনিটের দিকে এঘটনা ঘটে বলে জানা গিয়েছিল।
চাঁদনীঘাট ব্রিজের কাছে সংঘবদ্ধ একটি হিজড়া দল বিয়ে গাড়ী আটকিয়ে চাঁদা আদায় সহ নানা অপরাধ চালিয়ে যেত। ঘটনার রাতে হিজড়া অঞ্জনা (আলমগীর হোসেন) এবং ঝর্ণা নামক হিজড়া চাঁদনীঘাট ব্রিজের পাশে একটি দোকানের সামনে দাড়িয়ে থাকা অবস্থায় অঞ্জনার উপর হামলার ঘটনা ঘটে।
হিজড়া ঝর্ণা জানায়, ঘটনাস্থলের সামনে একটি দোকানের সম্মূ্ুখে কেন বা কি কারনে হঠাৎ দুজন লোক এসে অঞ্জনার উপর একটি ক্রিকেট খেলার বেট দিয়ে আঘাত করে এবং পরোক্ষণে হিজড়া ঝর্ণা চৌহমনার দিকে দৌড় দেয় পুলিশকে খবর দিতে। এসে দেখে অঞ্জনার লাশ রাস্তায় পড়ে আছে।
ঝর্ণা আরো জানায়, যারা হামলা করেছে তাদের দেখলে চিনতে পারবে। আসলে কেন কি কারনে হিজড়া অঞ্জনার উপর হামলা এবং হত্যার বিষয় উঠে আসছে তা এখনো পরিস্কার জানা যায়নি। এ সময় সদর মডেল থানার এস আই জাকির হোসেন জানান, এটা হত্যা নাকি দূর্ঘটনা তা এখনো বুঝা যাচ্ছে না। তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টি পরবর্তীতে জানানো যাবে।
স্থানীয় বেশ লোকজন জানান, এটি কোন দুর্ঘটনা নয়, হত্যা। তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে কেউ কিছু বলতে পারেননি। উপস্থিত স্থানীয় কাউন্সিলর এবং বেশ কয়েকজন উক্ত ঘটনাকে খুব জঘন্য এবং নিন্দনীয় উল্লেখ করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে যে বা যারা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তাদের বিচারের দাবী জানান।
নিহত হিজড়া অঞ্জনা (আলমগীর হোসেন) এর বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শ্রীক্ষরপুর গ্রামে বলে জানা গেছে। নিহতের বোন এবং আপন ভাই অঞ্জনার মৃত্যু দূর্ঘটনায় নয় হত্যা বলেই ধারনা করছেন বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া সাথে থাকা হিজড়া ঝর্ণাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আসল তথ্য বেরিয়ে আসবে এবং দোষীদের চিহৃিত করে শাস্তির দাবী জানান।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি ইয়াসিনুল হক জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, উক্ত আসামী মামলার ঘটনার পর হইতে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য দীর্ঘদিন আত্নগোপনে ছিল। উক্ত আসামীকে গ্রেফতার করনের লক্ষ্যে মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশের দুটি চৌকস টিম গঠন করে অভিযান পরিচালনা করছে। এমন চাঞ্চল্যকর (তৃতীয় লিঙ্গের) আলোচিত মর্মান্তিক মৃত্যু মামলার আসামীদের কখনো ছাড় দেওয়া হবে না এবং আসামীর সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।