আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মিয়ানমার সেনাবাহিনী সেদেশের ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি বা এনএলডি নেত্রী অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও সরকারের পদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তাকে আটক করেছে। সেই সাথে দেশটিতে সামরিক শাসন জারি করেছে সেনাবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ মিন অং লাইং। এনএলডি’র এক মুখপাত্র তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। খবর-রয়টার্স।
আজ সোমবার (১ ফেব্রুয়ারী) ভোররাতে সু চি’র পাশাপাশি মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ সরকারি দলের আরো কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় নেতাকে ধরে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী। এসব আটকের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সারাদেশে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। বন্ধ হয়ে গেছে মোবাইল, ইন্টারনেট সার্ভিস ও টেলিভিশন সম্প্রচার কার্যক্রম।
সেনাবাহিনীর মালিকানাধীন মিয়াওয়াদি টেলিভিশনে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি দেশের ক্ষমতা সেনাবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ মিন অং লাইং-এর কাছে হস্তান্তর করছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট মিন্ট সোয়েকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছে সেনাবাহিনী। এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে দেশটিতে। ভোট কারচুপির অভিযোগে সেনাবাহিনী এই অভিযান পরিচালনা করেছে।
এনএলডির মুখপাত্র মিয়ো নিউন্ট টেলিফোনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, দলের নেত্রী সুচি, প্রেসিডেন্ট উইট মিন্ট এবং অন্য নেতাদের সোমবার ভোররাতে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি মিয়ানমারের জনগণকে এ ব্যাপারে তড়িঘড়ি প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে আটকের পরপরই মিয়ানমারের রাজধানী নিপিড এবং প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবা। কারিগরি ত্রুটির কথা জানিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এমআরটিভি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর দেশটিতে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচন নিয়ে অং সান সুচি’র দল এনএলডি এবং শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। নির্বাচনে এনএলডি ৩৬৪ আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) প্রতারণা ও ভোট কারচুপির অভিযোগ করে আসছে শুরু থেকেই। পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ সংসদ অধিবেশন আহ্বান করার কথা ছিল। তবে নির্বাচন সংক্রান্ত উত্তেজনার ভেতরেই সংসদ অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা দিয়ে সোমবার ভোরে অং সান সু চিকে আটক করে সামরিক বাহিনী।
এর আগে ২০১১ সাল পর্যন্ত মিয়ানমারে সামরিক শাসক ক্ষমতায় থাকা পর্যন্ত বহু বছর সু চি গৃহবন্দি ছিলেন।